Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, লক্ষ্মীপুর তথ্য বাতায়নে আপনাকে স্বাগতম! কৃষি বিষয়ক যেকোন সমস্যায় উপজেলা কৃষি অফিস অথবা কৃষি কল সেন্টারের ১৬১২৩ নম্বরে বা কৃষক বন্ধু সেবার ৩৩৩১ নম্বরে কল করে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারেন। ধন্যবাদ!  কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি আবহাওয়া তথ্য সেবা পেতে  বাংলাদেশ কৃষি আবহাওয়া তথ্য সেবা (বামিস)-এ  ক্লিক করুন  এবং ফসলের মাঠে বালাই আক্রান্ত হলে সঠিক ডোজ  সহ বালাইনাশকের নাম তাৎক্ষনিক জানতে বালাইনাশক নির্দেশিকা ওয়েবসাইটে  ক্লিক করুন। 

কৃষি ব্যবসায়ে যুবক ও নারীদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে পার্টনার (ডিএএম অংগ) প্রকল্পের আওতায় লক্ষ্মীপুর জেলার যুবক ও নারীদের অন দ্যা জব ট্রেনিং (OTJ) বা কাজের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ (আবাসিক) প্রদানের মাধ্যমে উদ্যেক্তা তৈরী ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। আগ্রহী যুবক (১৮-৩৫) ও নারীদের (১৮-৪৫) নিকট থেকে সংযুক্ত পত্রের নিয়মাবলী অনুসরণ করে কৃষি বিপণন কর্মকর্তার কার্যালয়, বাগবাড়ি, লক্ষ্মীপুর এ সংশ্লিষ্ট ফরমে আগামী ১০ মার্চ ২০২৫ এর মধ্যে আবেদন আহবান করা যাচ্ছে। বিস্তারিত.....


শিরোনাম
একজন নারী কৃষি উদ্যোক্তা পপির সাফল্যগাঁথা
ছবি
ডাউনলোড

একজন নারী কৃষি উদ্যোক্তা পপির সাফল্যগাঁথা

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়ন, যা বিভিন্ন ধরনের রবি ফসল যেমন- সয়াবিন, চিনাবাদাম, মরিচ, মুগ ডাল, ফেলন, ভূট্টা ইত্যাদি আবাদের জন্য সুপরিচিত। সয়াবিন চাষের জন্য বিখ্যাত এই জেলায় রবি মৌসুমে কৃষক/কৃষাণীরা সয়াবিন চাষে বেশি আগ্রহী থাকেন। কিন্তু ধীরে ধীরে কৃষি বিভাগের প্রচেষ্ঠায় ফসলের বৈচিত্রতা বাড়ছে। এখন কৃষক/কৃষাণীরা রবি মৌসুমে সয়াবিন ছাড়াও অন্যান্য রবি ফসল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। বর্তমানে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের কৃষক/কৃষাণীরা তাই বৈচিত্রময় রবি ফসল আবাদের জন্য সুনাম অর্জন করেছেন।

পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও আধুনিক ও লাভজনক কৃষিতে অনেক এগিয়ে গিয়েছেন। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের তেমনি একজন নারী কৃষি উদ্যোক্তা পপি মানিক। এই গ্রামে নারী উদ্যোক্তা হিসাবে তার যথেষ্ঠ সুনাম রয়েছে এবং তিনি অন্যান্য নারীদের জন্য অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচিত হন। তিনি ধান আবাদের পাশাপাশি রবি মৌসুমে বিভিন্ন ফসলের আবাদ করে থাকেন। প্রতি মৌসুমে তিনি প্রায় ১ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসলের আবাদ করলেও কখনোই চীনাবাদাম আবাদ করেননি।

উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পপিকে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে রবি/২০২১-২০২২ মৌসুমে তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় চিনাবাদাম-পতিত-পতিত প্যাটার্ণের চিনাবাদামের একক প্রদর্শনী (৫০ শতক) দেওয়া হয়। প্রকল্পের সহায়তায় প্রথমবারের মত তিনি বারি চিনাবাদাম-৯ আবাদ করেন। প্রথম অবস্থায় এই ফসলটি লাভজনক হবে কিনা এই নিয়ে তার মনে কিছুটা দ্বিধা কাজ করে। কিন্তু কৃষি অফিসের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও পরামর্শে সঠিক ব্যবস্থাপনার কারণে বীজ বপনের পর যখন চারা গজাতে শুরু করে, তখন তার মনের দ্বিধা আস্তে আস্তে কেটে যায়। বপনকৃত বীজের প্রায় ৯২ ভাগ অংকুরোধগম হয়। বীজ গজানোর হার দেখে পপি মানিকের মুখে হাসি ফুটে উঠে এবং আশেপাশের কৃষক/কৃষাণীরা নিয়মিত তার জমি আগ্রহ ভরে দেখার জন্য আসতে শুরু করে।

প্রকল্প কার্যালয় থেকে সরবরাহকৃত দুই বস্তা (১০০ কেজি) জৈব সার জমি তৈরির সময়ে প্রয়োগ করেন। এর আগে তিনি কখনোই আলাদা করে জৈব সার জমিতে প্রয়োগ করেননি। মাটির জীবনীশক্তি ধরে রাখতে জমিতে তার এ ধরনের জৈব সার আলাদাভাবে প্রয়োগ করতে দেখে আশপাশের কৃষকরা প্রথমে একটু অবাক হয়। পরবর্তীতে ফসলের অবস্থা দেখে তারা এই সারের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারে।

প্রকল্প কর্তৃক সরবরাহকৃত বালাইনাশক যথাসময়ে প্রয়োগ করার কারণে তার বাদামের জমি সবসময় ভালো অবস্থানে ছিল। তেলজাতীয় ফসলে জিপসাম, বোরন ও ম্যাগনেসিয়াম সারের ব্যবহার দেখে আশপাশের কৃষকরা তার কাছে এইসব সারের গুরুত্বের কথা জানতে চাইলে পপি মানিক তাদেরকে সকল কিছু বুঝিয়ে দেয়। বলা যায়, তার হাত ধরে ঐ এলাকার বাদাম চাষীরা জৈবসার থেকে শুরু করে জিপসাম, বোরন ও ম্যাগনেসিয়াম সার ব্যবহার করতে শিখে।

প্রকল্পের সহযোগিতা বাদ দিয়ে জমি তৈরী, আন্ত: পরিচর্যা, ফসল কর্তন ইত্যাদি কাজে পপি মানিকের খরচ হয়েছে ৭,০০০ টাকা। তিনি বলেন, "আমি কখনো চিনাবাদাম চাষ করিনি কিন্তু চিনাবাদামের এই জাত খুবই লাভজনক এবং বীজের চাহিদাও অনেক বেশি" । সবমিলিয়ে কৃষাণী পপি মানিক ৫০ শতক জমিতে বারি চিনাবাদাম-৯ পেয়েছেন ১৩ মণ। তিনি ১০ মণ চিনাবাদাম বীজ হিসেবেই আশপাশের কৃষকের কাছে বিক্রি করেছেন। এতে তার আয় হয় ৭৫,০০০ টাকা। " আমারতো সবটাই লাভ"-হাসতে হাসতে বলেন তিনি।

 কৃষাণী পপির সাফল্যে এলাকার অন্য কৃষক/কৃষাণীরা ব্যাপক ভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছে এবং তারা এই জাতের বাদাম চাষের জন্য আগ্রহী হয়েছে। এলাকার এক কৃষাণী জানান, "আপা সবসময়ই নতুন কিছু করে আমাদের পথ দেখিয়ে দেয়। আমরা সেই পথ অবলম্বন করে লাভবান হই। এবার আপাকে দেখেছি বাদাম চাষ করে আমাদের এলাকার লাভজনক কৃষিতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমরা অবশ্যই এই চিনাবাদাম চাষ করবো"।

"আগামী বছর কিন্তু ৩ বিঘা জমিতে আমি এই জাতের (বারি চিনাবাদাম-৯) বাদামের আবাদ করবো"-আসার পথে তিনি আমাদের জানিয়ে দিলেন।

উপজেলা কৃষি অফিস স্বপ্ন দেখে, পপি মানিকের এই সফলতা এলাকার অন্য নারীদের কৃষিতে এগিয়ে আসতে অনুপ্রাণিত করবে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি পাবে।